একটি ধনী ব্যক্তির গল্প
একটি ধনী ব্যক্তির গল্প
এক খুব ধনী ব্যক্তি ছিল। সে সমুদ্রে একা ভ্রমণের জন্য একটি নৌকা ক্রয় করল।
এমন এক ছুটির দিনে সে নৌকায় করে ভ্রমণে বের হলো। মাঝ সমুদ্রে যখন তার নৌকা পৌঁছাল, তখন প্রচণ্ড ঝড় উঠল। তার নৌকা প্রায় ডোবার উপক্রম। সে সমুদ্রে ঝাঁপ দিল এবং সাঁতার কেটে কোন রকমে প্রাণ বাঁচাতে চেষ্টা করল।
কিছু দূরে সে একটি দ্বীপ দেখতে পেল। সে সেখানে পৌঁছাল। কিন্তু সেখানে কোনো মানুষজনই দেখতে পেল না। চারিদিকে যেদিকেই নজর যায়---শুধু সমুদ্র আর সমুদ্র।
সে ভাবতে লাগল-জীবৎকালে আমি তো কারও ক্ষতি করিনি, তাহলে এমন কেন হলো ?
পর মূহুর্তেই আবার ভাবল---মৃত্যুর হাত থেকে তো ভগবানই আমাকে বাঁচিয়ে, এখানে আসা পর্যন্ত রাস্তা দেখিয়েছেন, তাহলে পরবর্তী রাস্তাও অবশ্যই তিনি দেখাবেন।
সে সেই দ্বীপের ফল, মূল, জল খেয়ে আশায় দিন কাটাতে লাগল। কিন্তু দিন যায়, উদ্ধারের কোনো আভাস না পাওয়ায়, ঈশ্বরের প্রতি তার ভরসা দিন-দিন কমতে লাগল। সে ভাবতে লাগল, বাকি জীবন যখন এই দ্বীপেই কাটাতে হবে, তাহলে একটা ঘর বানিয়ে-ই ফেলি ? সে এদিক-ওদিক থেকে লতা পাতা, ডাল জোগাড় করে একটি কুটীর বানিয়েই ফেলল।
সে স্বস্তি পেল-এবার আর বাইরে ঘুমাতে হবে না। একটু আরামে ঘুমাতে পারব।
কিন্তু সেই রাতেই প্রচণ্ড বর্ষণ শুরু হলো। বাজ এসে পড়ল কুটীরে। তারই চোখের সামনে জ্বলতে লাগল, তার সাধের আস্তানা।
এই ঘটনার পরে লোকটি পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়ল। আকাশের দিকে দুই হাত তুলে ভগবানকে বলতে লাগল----
"হে প্রভু, কি আমার অপরাধ ? কেন তুমি আমায় একটু কৃপা করছ না" ?
মাথায় হাত দিয়ে বসে কান্না করতে লাগল। ঠিক তক্ষুনি একটি নৌকা দ্বীপে এসে থামল। দুইজন লোক নেমে এসে, তার পিঠে হাত দিয়ে বলল---"দূর থেকে এই নিঝুম দ্বীপে দাউ-দাউ আগুন দেখে, আমরা এসেছি তোমাকে বাঁচাতে। এত আগুন দেখেই আমরা বুঝতে পেরেছি, দ্বীপে কেউ নিশ্চয়ই বিপদে আছে"।
তুমি যদি নিজেরই কুটীর এইভাবে না জ্বালাতে, আমরা তো বুঝতেই পারতাম না। লোকটির চোখে জল চলে এল।
সে ভগবানের কাছে ক্ষমা চাইতে লাগল---
"হে প্রভু, আজ আবারও প্রমাণ পেলাম-তুমি সর্বদাই তোমার ভক্তের সঙ্গে থাকো। ভক্তের পক্ষে যেটা মঙ্গল, সেটাই তুমি কর।
কিন্তু আমরাই বুঝতে ভুল করে, তোমার লীলা বুঝতে অসমর্থ হই। আমায় ক্ষমা করে দাও প্রভু"।
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন